কৃষাণী
দুলাল চন্দ্র সরকার*
কৃষক রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে
যে ফসল করে উৎপাদন
কৃষানি তাতে যত্নের সাথে ঘরে তুলে
নানাবিধ খাবার করে যে রন্ধন॥
মাটি চিড়ে ফসল ফলাতে
কৃষক ধরেছে হাল
ক্ষুধার অন্ন জোগায় নারী
প্রতিদিন চিরকাল॥
রান্নার ভার নারীর ওপর
তবু তারা খায় না কো আগে
পুরুষকে খাওয়ায়ে খায় সে পরে
যা কিছু থাকে তার ভাগে॥
রাঁধিল খাবার অতি চমৎকার
মনের মাধুরী মিশিয়ে
সারাদিন ভরে শত কাজ করে
সংসার রাখে সে গুছিয়ে॥
লাকড়ি ঠেলে অনল জে¦লে
চুলায় চড়ায়ে হাঁড়ি
নানাবিধ ব্যাঞ্জন করিতে রন্ধন
ভিজে যায় পরনের শাড়ি॥
মায়াবিনী নারী মায়ার বাঁধনে
গড়ে তুলে নতুন সংসার
তবুও এ সংসারে বহু বহু কাজে
নারীকেই হতে হয় গঞ্জনার স্বীকার॥
রূপান্তরের স্রোত
মো. জুন্নুন আলী প্রামানিক**
আগের দিন চলমান আছে রূপটি হয়তো ভিন্ন,
সবুজে ভরা অগণিত বৃক্ষ প্রচুর কর্তনে শূন্য।
দিনের শেষে প্রতি রাত ফেরে দুঃখ সুখের স্রোতে,
আনন্দ যত নিরানন্দ শত সম্মুখে দাঁড়ায় মেতে।
মাটির শক্তি ক্রমান্বয়ে কমে সঠিক সেবার ভুলে,
অনেক জমি রূপান্তরে ডুবে স্বরূপ হারিয়ে ফেলে।
নদীর গতি এলোমেলো বয় নিয়মে ব্যাঘাত হলে,
অকালে বন্যা ঝড়বৃষ্টি শীত দুর্যোগ বৃদ্ধির তালে।
নিয়মে চলা জলবায়ু কাঁদে বাধার পাহাড় দেখে,
মাধুর্য দিতে অপারগ হলে দৃষ্টির বক্রতা চোখে।
বনের স্বস্তি জীবজন্তু গাছ নীরবে হারিয়ে যায়,
বিচিত্র সৃষ্টি উপকার করে বিশুদ্ধি সর্বদা দেয়।
মানব সাথী পশুপাখি সব অভাব দুঃখ বুঝে,
সুখের দিন খোঁজাখুঁজি করে অপুষ্টি দেহের মাঝে।
নদীর জলে দেশি মাছ কম পাখির আহার যাতে,
বনজ ফলে বনভূমি অল্প খাবার জোটে না তাতে।
পাহাড় বন সুবিশাল মাটি জড়িত প্রকৃতি বুকে,
সুগতি পেতে ভূমিকম্পে মাতে ঐতিহ্য ফেরার শোকে।
বাতাসে রাগ অনুরাগ স্রোত প্রশান্তি নষ্টের মূল,
শুদ্ধতা ক্ষয় দূষিতের চাপে সুপথে অনেক ভুল।
সমস্যা নানা আজগুবি আসে ভাবতে অবাক লাগে,
সুন্দর ক্ষেতে ভরাডুবি ঘটে আক্রান্ত ভীষণ রোগে।
হঠাৎ বন্যা আক্রমণ করে ভাসায় আশার শস্য,
রক্ষার চেষ্টা ব্যর্থতায় ভরে ভাঙনে অশুভ দৃশ্য।
দুর্বার বেগে ঘুরপাক খায় বুঝতে দেয় না কিছু,
ফসল ক্ষেতে কৃষকের ঠাঁই ছাড়ে না কৃষক পিছু।
*পরিচালক (অব.), কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকা-১২১৫ **গ্রাম : বিদ্যাবাগীশ, ডাকঘর ও উপজেলা : ফুলবাড়ী, জেলা : কুড়িগ্রাম